ভূমিকা
বিবাহিত জীবনে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে নানা ধরণের ঝগড়া, সাংসারিক সমস্যা ইত্যাদি থাকা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। একসাথে দুইজন মানুষ বসবাস করলে নানা সমস্যার উদ্ভব ঘটবেই। তার ওপর যদি কোন লোকের একাধিক স্ত্রী থাকে, সেই সংসার কীরকম সমস্যাপূর্ণ হবে তা বোঝাই যায়। এর মধ্যে সেই স্বামী পুরুষের যদি প্রচণ্ড আলুর দোষ থাকে, সে যদি একাধিক স্ত্রী থাকার পরেও বাসার দাসীবাঁদীদের দিকেও কুনজর দিতে থাকে, একইসাথে একের পর এক বিবাহ করার বাতিক থাকে, স্ত্রীগণ তাতে বিরক্ত হবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বামী লোকটি যদি স্ত্রীদের রীতিমত জিম্মি করে, তাদের হুমকি ধামকি দিয়ে নিজের লাম্পট্য চালু রাখে, এরকম একটি সংসারে সেই স্ত্রীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে, এটি যেকোন মানুষই বুঝতে পারেন। আজকে আমরা নবী মুহাম্মদের জীবন থেকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো সেই ঘটনাটি, যেই ঘটনাটির কারণে নবী তার সকল স্ত্রীকে একসাথে তালাক দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, নতুন অনেকগুলো বিবি আনার হুমকি দিয়েছিলেন এবং এই হুমকি দেয়ার মাধ্যমে তার লাম্পট্যে যেন আর কেউ ভবিষ্যতে বাধা দিতে না পারে, সেই শিক্ষাটি স্ত্রীদের দিয়েছিলেন, সেই ঘটনাটি আলোচনা করবো। আসুন ধীরে ধীরে পুরো ঘটনাটি দলিল প্রমাণ সহ যাচাই করে দেখি। পাঠকের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, নবীর জীবনের এইসব ঘটনা ইসলামিক আলেমগণ অনেক কৌশলে লুকাবার চেষ্টা করলেও, ফাঁক ফোকর দিয়ে আসলে সত্য কাহিনী বের হয়ে যায়। সেই ফাঁকফোকর গুলো আমরা যৌক্তিকভাবে যাচাই করবো।
মূল ঘটনা
নবী মুহাম্মদের স্ত্রীদের জন্য জীবনের সবচাইতে কঠিন সময় ছিল, যখন নবী মুহাম্মদ যৌনদাসী মারিয়া কিবতিয়ার সাথে হাফসার ঘরে যৌনকর্ম করার সময় হাফসার কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে, এর পরবর্তী সময়টুকু। সেই সময়ে লজ্জায় মুহাম্মদ প্রতিজ্ঞা করে বসে যে, সে আর মারিয়া কিবতিয়ার সাথে যৌনকর্ম করবে না। হাফসাকে এই লোভও দেখানো হয় যে, এই কথা আয়িশাকে না বললে হাফসার পিতা উমর আবু বকরের পরে ইসলামই রাষ্ট্রের খলিফা হবে। নবী মুহাম্মদ হাফসাকে এই ঘটনাটি গোপন করতে বলেন, সে যেন অন্য স্ত্রী বিশেষ করে আয়িশাকে এই ঘটনাটি না বলে দেয়। কারণ আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে, আয়িশা খুব স্পষ্টভাষী মেয়ে ছিলেন, নবী মুখের ওপর মাঝে মাঝেই কথা বলতেন। তাই বিশেষভাবে আয়িশাকে যেন এই ঘটনা না বলা হয়, সেইদিকে নবী মুহাম্মদ বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন।
কিন্তু নবীর মনে তখন মারিয়ার প্রতি কামনার জোয়ার। মারিয়ার সাথে যৌনকর্ম না করে তিনি থাকতে পারছিলেন না। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, মারিয়া কিবতিয়া ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী এবং নবী তার সাথে সঙ্গমের জন্য খুবই উদ্গ্রীব থাকতেন। তাই মারিয়ার সাথে যৌনকর্ম করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করার পরেও নবীর মনে তখন মারিয়ার সাথে সঙ্গমের ইচ্ছে জাগ্রত হয়। ঐদিকে নবী মুহাম্মদের স্ত্রীগণ খুবই খুশি ছিলেন এই ভেবে যে, নবী আর মারিয়ার সাথে যৌনকর্ম করছেন না। কিন্তু নবী নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেননি, আবারও মারিয়ার সাথে সেই কর্ম করে বসেন। প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে মারিয়ার সাথে আবারও যৌনকর্ম করায় মুহাম্মদের স্ত্রীদের একাংশ নবীর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে, এর ফলাফল হিসেবে নবী মুহাম্মদের কাছে সূরা তাহরীমের আয়াতগুলো নাজিল হয়। নবী একসাথে তার সকল বিদ্রোহী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার হুমকি দেন। আসলে আল্লাহই এই হুমকি দেন সূরা নাজিল করে। নবী যে মারিয়া কিবতিয়ার সাথে যৌনকর্ম করতে পারছেন না, এতে আল্লাহ মহা নাখোশ হয়েছিলেন তা বলাই বাহুল্য।
যাইহোক। এরপরে নবী মারিয়া কিবতিয়ার বাসায় চলে যান এবং সেখানে তিনি দীর্ঘ একমাস অবস্থান করেন। অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে নবী এই সময়ে তার সকল স্ত্রীদের একত্রে তালাক দেয়ার হুমকিতে অটল থাকেন। আল্লাহ বরাবরের মতই ছিলেন নবীর দলে, তিনি আয়াত নাজিল করে নবীকে দাসী সেক্স করতে উৎসাহ দিতে থাকেন। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব কেন হয়েছিল, পরিস্থিতি কতটা মারাত্মক পর্যায়ে গিয়েছিল, সেগুলো নিয়েই আমাদের এই লেখাটি। আশাকরি পাঠক মন দিয়ে দলিল প্রমাণগুলো পড়বেন এবং যাচাই করে দেখবেন। এরপরে সিদ্ধান্ত নেবেন যে, এই বিষয়গুলো কতখানি নবীসূলভ আর কতখানি একজন লম্পট লোকের ঘরোয়া ঝগড়াঝাটি। সাত আসমানের ওপর বসে থাকা আল্লাহ পাক যিনি মহাবিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, যিনি মহাবিশ্ব পরিচালনা করেন, তিনি নবীর ঘরোয়া ঝগড়ায় নবীর পক্ষ হয়ে দাসীর সাথে যৌনকর্মের জন্য উকালতি করছেন, সেটি মুখ বুজে মেনে না নিলে সব বিবিদের তালাকের হুমকিধামকি দিচ্ছেন এবং নবীকে দাসী সেক্স করতে উৎসাহ দিচ্ছেন, এগুলো নিয়ে হাসির নাটক সিনেমা হিসেবে তৈরি করা হলেও মানা যেতো। কিন্তু বিষয়গুলো ধর্মীয় বিশ্বাস এবং লক্ষ কোটি মানুষ এগুলো অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, এটাই এক উদ্ভট বিষয়।
নবীর যৌনদাসী মারিয়া কিবতিয়া
বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের অধিনস্ত মিশরীয় সম্রাট মুকাউকিস হিজরি ৬ অথবা ৭ সালে অর্থাৎ ৬২৮ বা ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে, মারিয়া আল-কিবতিয়া নামক একজন মিশরীয় কপ্টিক খ্রিস্টান দাসীকে মুহাম্মাদের নিকট উপহার হিসাবে প্রদান করেন। মুহাম্মাদ তাকে দাসী হিসেবে গ্রহণ করেন তবে তিনি সাধারণ ক্রীতদাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন যৌনদাসী। অর্থাৎ মারিয়া কিবতিয়াকে গৃহকর্ম কিংবা অন্য কোন কাজ করতো হতো না, তার একমাত্র কাজই ছিল মালিককে যৌনসুখ দেয়া। তার আসল নাম মারিয়া বিনত সাম’উন, তবে তিনি মারিয়া আল-কিবতিয়া নামেই অধিক পরিচিত। মারিয়া ছিলেন মিশরীয় সম্রাট মুকাউকিসের হাতে ধরা পড়া একজন যুদ্ধবন্দী [3]। তিনি ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মাদ নামে মুহাম্মাদের একটি সন্তানের জন্ম দেন, যে কিনা ১৬ অথবা ১৮ মাস বয়সে শিশুকালেই মারা যায়। সুনানু নাসাই শরীফের একটি তাহকীককৃত সহিহ হাদিসে তার সাথে নবীর যৌন সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে