ইসলামের নবী মোহাম্মদের (কু) চরিত্র এবং নবীকে বাঁচানর জন্যে মুসলিম ছাগুদের তথাকথিত কুযুক্তিগুলোর খন্ডন করা হলো নিন্মে, দুই বন্ধুর কথোপকথন এর মাধ্যমেঃ
-দেখ তোদের সমস্যাই হচ্ছে তোরা রাসুল কে দেখতে পারিস না, উনি ভালো কাজ করলেও তোদের ভালো লাগে না। উনি কোন খারাপ কাজ করতেই পারেন না, কারণ উনি আল্লাহর খাস বান্দা। উনার ছয় বছরের পিচ্চি বউ আয়েশার সাথে উনি বিয়ে করেছিল বিশেষ কিছু কারনেঃ
১- রাসুলের প্রথম বউ ছিল বয়স্ক, উনি চায়লে তো প্রথমেই কচি একজন কে বিয়ে করতে পারতেন
২-আমাদের হুমায়ুন আহমেদও অল্প বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করেছিল, জাতির পিতা শেখ মুজিব করেছিল, রবিন্দ্রনাথ করেছিল, ইংল্যান্ডের রাজা করেছিল, তাই রাসুলও করে ফেলেছিল…সিম্পল!
৩-আয়েশা শিশু হলেও অনেক জ্ঞানী ছিল, বিচক্ষন ছিল, বুদ্ধিমতি ছিল ইত্যাদি। তুই কি জানিস না যে বিজ্ঞানিরা প্রমান করেছে মেয়েরা ছেলেদের থেকে ১০ গুন তাড়াতাড়ি মেচিউর হয়।
৪-আয়েশার আরেক জায়গায় জুবায়ের নামের একজনের সাথে বিয়ে ঠিক ছিল
৫-শিশু ‘মা আয়েশা’ নিজে রাজি ছিল, আর অই সময় সবাই পিচ্চিদেরও বিয়ে করত, তাই রাসুলও পিচ্চি দেখেই বিয়ে করে ফেলেছিল।
৬-আর এই শিশু ‘মা আয়েশা’কে রাসুল তো বিয়ে এমনি এমনি করে নাই,আল্লাহই অনেক আগে থেকে এই বাল্য বিবাহ পূর্বপরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। এর পিছনে আসল হোতা আল্লাহ্।
এখানে খারাপ তো কিছু দেখি না আমি, তোরা শালার সব আমার পেয়ারা রাসুল আর শিশু মা আয়েশা কে দেখতে পারিস না! এটাই তোদের আসল সমস্যা। কত সুন্দর জুটি তাদের,মাশাল্লাহ- ৫১:৬
-হা হা, আসলেই কি সুন্দর জুটি রে!! আমার মনে হয় না এইরকম জুটি ইসলামের ইতিহাসে আর কোন রাসুলের ছিল এবং বর্তমানে বা ভবিষ্যতে দেখতে পাব আর কাউকে!!
শোন ধর যে, তোর দাদার দাদারা পূর্বে ঘরে কাজের মেয়ের সাথে সেক্স করত, তখন কাজের মেয়ে বিক্রি জন্যে সপ্তাহে হাট/বাজার বসত, সবাই নিজ নিজ পছন্দমত কাজের মেয়ে কিনে নিয়ে যেত বাসায়, এবং অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েও ছিল, এই কাজের মেয়ে দিয়ে তারা ঘরের কাজ থেকে শুরু করে সব করত, সেক্স তো ছিল মামুলি ব্যাপার এবং এইসব তোদের দাদিরা মেনে নিত এবং তারা…
-আরে ধুর, কিসব উদাহরন দিচ্ছিস!! আরো ভালো কিছু পেলি না, কত জঘন্য ব্যাপার এটা, মেয়ে মানুষ কি শুধু ভোগের বস্তু নাকি? আর মানুষ আবার কেনা যায় কি করে? ফালতু যতসব!!
-আরে খেপিস কেন, আমি তো একটা উদাহরন দিচ্ছি মাত্র। কিন্তু দোস্ত সবাই তখন তাই করত, এতে খারাপ কি আছে। তখন সমাজে এটাই প্রথা ছিল।
-থাকুক সমাজে প্রথা, সমাজে পূর্বে অনেক জঘন্য প্রথাই ছিল, বর্তমান সমাজ সেগুলাকে লাথি দিয়ে বিদায় করে দিছে।খারাপ তো খারাপই,সেটা অবস্থা আর সময়ের উপর নির্ভর করে নাকি, বিশেষ করে এই সুনির্দিষ্ট ব্যাপারে।আমার দাদারা এইসব করত না,তোর দাদারা করলে করতে পারে!!
-আরে খেপিস না, শোন,তাহলে তুই কিভাবে বলিস যে, রাসুলের সময়ে পিচ্চি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের কে বিয়ে করা রেওয়াজ ছিল, তাই রাসুলও বিয়ে করে ফেলেছিল!!
-নাহ,রাসুলের ব্যাপার তো ভিন্ন,উনি তো আল্লাহ্র রাসুল,উনি সবকিছু পারেন
-ভন্ডামি একদম পরিষ্কার তাহলে!! শোন তুই কি মুজিব বা রবিন্দ্রনাথের জীবন হুবুহু অনুসরন করিস?
-নাহ তাহ হবে কেন, পছন্দ করা আর অনুসরন করা তো এক না
-ঠিক তাই,রাসুল হচ্ছে আজীবন, চিরন্তন মানুষের জন্যে অনুকরনীয়, উনি কিভাবে এই কাজ করেন? এমনকি ইসলামের অন্য কোন রাসুল কি এমন করেছিলেন? রাসুলের সাথে হুমায়ুন আহমেদ বা ইংল্যান্ডের রাজার তুলনা করা বোকামি, কারণ তারা কেউ “চিরন্তন অনুকরনীয়” নয়। তাহলে দেখ ব্যাপারটা কেমন দাড়াল, চিরন্তন অনুকরণীয় ব্যাক্তির বিয়ের ব্যাপারটাই ১৪৫০ বছর পর অনুকরণ করার যাচ্ছে না, তার নিজের অনুসারীরাই অনুকরন করতে লজ্জা পায়!! এর মানে কি দাড়াল? তাহলে উনি বা উনার কাজ চিরন্তন অনুকরণীয় কি করে হয়?
আচ্ছা তোরা মুমিনরা রাসুলের সুন্নাত বলতে কি বুঝিস?
-রাসুল যা যা করেছে সব করতে হবে,এই যেমন আমার বাবা টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজেন না, উনি নিম গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাজেন, উনার অবশ্য দাঁতের অনেক রোগ আছে বটে।
-তাহলে রাসুলের বিয়ের ব্যাপার আসলে তোরা কেন লাফিয়ে পিছে চলে যাস? এখন কেন ৬ বছরের কাউকে বিয়ে করতে চাস না? রাসুল বা আল্লাহ্ কি এটা মানসুখ করে গেছিল?
-নাহ, মানসুখ করেন নাই বটে, তবে …অ্যাঁ… মানে …
-তুই কি IFTA নাম শুনেছিস?
-নাহ তো, কি এটা?
-সারা সুন্নি মুসলিম বিশ্বে ইসলামি শারিয়া ও দ্বীনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ সৌদি সরকারের ইসলামি গবেষণা ও ইফতা বিভাগ (The General Presidency of Scholarly Research and IFTA), যার চেয়ারম্যান ছিলেন ইসলামি ফাতওয়ার সর্বোচ্চ মুফতি শাইখ আব্দুল আজিজ ইবনে বায, যার ডিক্রী বা রুলিংকে চ্যালেঞ্জে করার মত সাহস সুন্নি বিশ্বে কম আছে! এই গবেষণা ও ইফতা বিভাগ কোরান ও হাদিস বিষয়ে সর্বোচ্চ জ্ঞানী মুফতিদের সমন্বয়ে গঠিত।
বিবি আয়েশার বিবাহ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে সৌদি গবেষণা ও ইফতা বিভাগ কি বলে জানিস?
-নাহ, কি বলে?
IFTA প্রশ্নঃ এটা কি সত্য যে অপ্রাপ্ত বয়সের বিবি আয়েশার সাথে নবির বিবাহ শুধু নবির জন্য প্রযোজ্য? নাকি এটি সকল মুসলিম উম্মার জন্যও সমান ভাবে প্রযোজ্য? অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়েদের সাথে যৌনসঙ্গম করা যাবে কি ? তারা কি ৩ মাস ইদ্দত কাল পালন করবে ?
উত্তরঃ ফাতওয়া নং ১৮৭৩৪। “বিবি আয়েশা নবির (উনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক) সাথে বাগদত্তা হয়েছিলেন ছয় বছর বয়সে। নবি এই বিবাহ পূর্ণ করেন (যৌনসঙ্গম দ্বারা) মদিনায় যখন বিবি আয়েশার বয়স ছিল নয় বছর। এই বিধান শুধুমাত্র নবির জন্য নয়। অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়ে বিবাহ করা ও যৌনসঙ্গম করা সবার জন্য বৈধ,এমনকি মেয়ে সাবালিকা না হলেও, যদি সে যৌনসঙ্গম করতে সক্ষম হয়। অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়ের ইদ্দত কালও ৩ মাস হবে”।
বর্তমানের ইসলামিস্টরা দাবী করেন,নবী বিবি আয়েশার নয় বছর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন, যতদিন না উনার হায়েয হয় (সঙ্গমকালে বিবি আয়েশার হায়েয হয়েছিল এমন কোন দালিল হাদিসে বা সিরায় পাওয়া যায় না)। অর্থাৎ মাসিক হওয়ার বা সাবালিকা হওয়ার পূর্বে ইসলাম যৌনসঙ্গম সমর্থন করে না। কিন্তু উপরের ফাতওয়াতে এটি স্পষ্ট যে, ইসলামে যৌনসঙ্গম করার জন্য সাবালিকা হওয়া বা মাসিক হওয়া কোন পূর্ব শর্ত নয়।
খেয়াল করে দেখ ফতোয়াতে বলা হয়েছে “যৌনসঙ্গমে সমর্থ” হলেই সেক্স করা যাবে, এখানে স্ত্রীর অনুমতির কোন বালাই নাই। কিন্তু এখন সভ্য সমাজে জামাই যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া সেক্স করে সেটাও ধর্ষণ বলে পরিগণিত হয়।
সৌদি আরব থেকে প্রকাশিত সরকারী ওয়েবসাইটে (alifta.gov.sa)এই ফতোয়া পরিষ্কারভাবে দেয়া হয়েছে যে, বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ হালাল, সহবাসও হালাল এবং তা শুধু নবীর জন্যেই নয়, সকলের জন্যেই হালাল। এই ফতোয়াটি সৌদি সর্বোচ্চ স্কলার এবং গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ ইবনে বাজ দ্বারাও সত্যায়িত।
তুই যদি কিছু মনে না করিস, আরো একটা ব্যাপার বলতে পারি।
-হুম অবশ্যই,বলে ফেল, সব তো জানা দরকার। বন্ধুদের মাঝে আবার মাইণ্ড কিরে!
-সৌদির একজন গ্র্যান্ড মুফতি আল শামারির ফাতওয়া দিয়েছিলেন, যে নবী আয়েশার ছয় থেকে নয় বছর পর্যন্ত তার সাথে মুফাক্ষাতা (উরুমৈথুন্য/THIGHING/উরুতে লিঙ্গ ঘর্ষণ করে বীর্যপাত) করতেন। অতি সংক্ষেপে, ফাতওয়ায় বলা হয়েছে যে, ছয় বছর বয়সে বিবি আয়েশা যৌনসঙ্গম করতে সক্ষম ছিলেন না বিধায় নবি মহাম্মাদ তাঁর লিঙ্গ মোবারক বিবি আয়েশার দুই উরুর মধ্য দিয়ে মৃদু ভাবে ঘর্ষণ করে নিজের কামনা পুরন করতেন। উনি নবি বিধায় উনার নিজের উপরে নিয়ন্ত্রন ছিল তাই মুফাক্ষাতা (উরুমৈথুন্য) সাধারণ মুসলমানের জন্য বৈধ নয়।
ফতোয়াটি অনলাইন থেকে তুলে নেয়। ফতোয়াটি নিচে সংযুক্ত করা হলো।
এছাড়া ISLAMWEB.NET এই নিয়ে আরো ফতোয়া পাওয়া যায়, ফতোয়া নাম্বার-৯২০৫১ এবং ৩৯০৭, অসম্ভব কিছু না দুই দিন পরে যদি এগুলোও অনলাইন থেকে সরিয়ে নেয়া হয় তো!]
এবং তোর রাসুল যে অন্তত মাসিকের সময়ও আয়েশাকে ছাড়তেন না, সেই ব্যাপারে একটা সহিহ হাদিস আছে, আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ “এবং তিনি আমাকে নির্দেশ দিলে আমি ইযার পরে নিতাম, আমার হায়েয অবস্থায় তিনি আমার সাথে মিশামিশি করতেন।”
ENGLISH -”During the menses, he used to order me to put on an Izar (dress worn below the waist) and used to FONDLE me”.( সহীহ বুখারী,তাওহীদ প্রকাঃ, হাদিস নম্বরঃ ৩০০,মানঃ সহিহ)
-হায়েজ অবস্থায় মিশামিশি করতেন! হায়েজ অবস্থায় এটা আবার কেমন মিশামিশি?
-তুই ইংলিশ ভার্সনে দেখ, বলা আছে FONDLE করতেন, এর মানে ডিকশনারি দেখে নিস। এছাড়া তাকে ইজহার নামের বিশেষ এক পোশাক পড়াতেন যা কিনা তার কোমড়ের নিচে ছিল…আর কিছু কি ভেঙ্গে বুঝাতে হবে এখন?
তুই নিজে কি একজন শিশু বউয়ের সাথে পিরিওড অবস্থায়ও কোনরকমের! মিশামিশি করতে যাবি?
তুই কি জানিস তোর রাসুল কিন্তু নিজেই বিবাহিত নারীকে বিয়ে না করে তোদেরকে কচি কচি মেয়ে বিয়ে করতে নির্দেশ/সুপারিশ করেছেন, যাতে তোরা পিচ্চি বউদের সাথে বেশী বেশী “খেলা করতে” পারিস…
-কি বলিস ব্যাটা আবোল তাবোল, স্ত্রীর সাথে আবার খেলা কি? বউদের সাথে আবার কী খেলার জন্যে মানুষ বিয়ে করে,আর খেলা তো যেকন বয়সের নারীর সাথেই করা যায়, হা হা
-সেটাই আমারও কথা, রাসুল তো বলেছে “খেলা করতে”, তোরা তো বিপদে পড়ে এখন বলিস রাসুল হয়ত “কুতকুত” খেলতে বলেছে বউদের সাথে,হা হা হা..মুল হাদিসে কি বলে শোন,
জাবির বিন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত:আল্লাহর রসুল (সা) আমাকে বললেন, ‘তুমি কি বিয়ে করেছো?’ আমি বললাম, হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘সে কী কুমারী না পুর্ব‑বিবাহিতা (বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা)?’ আমি বললাম, ‘পূর্ব‑বিবাহিতা।’ তখন তিনি বললেন, ‘কুমারীর সাথে মজা করার স্বাদ থেকে বঞ্চিত রইলে কেন?’ শু’বা বলেন—এই ঘটনার কথা আমি আমর বিন দিনারের কাছে উল্লেখ করলে আমর বলেছিলেন, আমিও জাবেরের মুখে বর্ণনাটি শুনেছি। (আল্লাহর রসুল) তাকে বলেছেন—তুমি একজন বালিকা বিয়ে করলে না কেন? তা’হলে তুমিও তার সাথে খেলতে পারতে, সেও তোমার সাথে খেলতে পারত। (সহীহ বুখারী,তাওহীদ প্রকাঃ, নাঃ ৫২৪৭)
একইভাবে উনি আবার বন্ধ্যা (বাচ্চা হয় না)নারীদের কে বিয়ে করতে নিষেধ করেছেন। আমাকে বল নারী কি শুধু বাচ্চা পয়দা করা মেশিন? এইসব শিক্ষিত নারী জাতি শুনলে কি ভাববে?
মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক সুন্দরী ও মর্যাদা সম্পন্ন নারীর সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করবো? তিনি বললেনঃ না। অতঃপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসেও তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। লোকটি তৃতীয়বার তাঁর নিকট এলে তিনি তাকে বললেনঃ এমন নারীকে বিয়ে করে যে, প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাঘিধক্যের কারণে গর্ব করবো। (আবু দাউদ, নাঃ ২০৫০,তাহকিককৃত,হাদিসের মানঃ হাসান, হাসান হাদিস আমলযোগ্য)
-হুম, বুঝলাম, আসলেই তো ব্যাপারগুলো অনেক বিব্রতকর…এইসব হাদিস তো জীবনে শুনান হয়নি আমাদের (ওয়াজে বা খুৎবায়)। হুজুররা কি ইচ্ছে করেই এইসব এড়িয়ে যায় তার মানে!
-শোন, ধর যে তুই তোর বউকে প্রান দিয়ে ভালোবাসিস, তোদের প্রায় ২৫ বছরের সংসার। হঠাৎ তোর বউ মারা গেল, তোর কি অবস্থা হবে?
-অনেক কষ্ট পাব, অনেক বছর সেই শোক থেকে বের হতে পারবই না।বলতে গেলে প্রথম সংসারের কথা ভুলে যাওয়া খুবই কষ্টকর।
-এইবার কি বলি মনোযোগ দিয়ে শোন, তুই কি এই শোকের মাঝেই, ঠিক তোর বউ মারা যাবার কিছু মাস পরেই একেবারে দু-দুটো বিয়ে করবি? যার মাঝে একটা আবার পিচ্চি মেয়ে, যখন তোর ঘরে আবার তার থেকেও বড় একটা মেয়ে আছে।
-অসম্ভব,ব্যাপার, ২৫ বছর সংসার করে যে বউকে ভালোবাসি, দ্বিতীয়ত বিয়ে করার চিন্তা আসতেও বছরখানেক বা আরও বেশী লাগতে পারে। মারা যাবার কিছু মাস পরে তো কোনদিনই না, এটা তো ভন্ডামি বলতে গেলে, তার মানে প্রথম বউকে বিয়ে করেছিলাম বিশেষ কোন কারনে, তাই তার মারা যাবার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম, যেই বউ মারা গেল, আর তেমনি লাফিয়ে একের পর এক বিয়ে শুরু করে দিলাম, তাই না? কোন সুস্থ মস্তিস্কের মানুষ ২৫ বছরের সংসার করা স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েক মাস পরেই বিয়ে শুরু করে নাকি!
-ভেরী গুড, বাহ কে বলে মুমিনের জ্ঞান নাই! শোন তুই কি জানিস, তোর রাসুল খাদিজা মারা যাবার কিছু মাস পরেই সাওদা এবং আয়েশাকে বিয়ে করে?
-যাহ!! কি বলিস, এটা হতেই পারে না, এমন তো শুনি নাই,সত্যি কি তাই !
-হা হা,তোদের আলেম আর ইমামরা তো এইসব বিতর্কিত ব্যাপার নিয়ে ওয়াজ করেন না, আর তোরাও তো শুধু নামাজ ছাড়া আর ইসলামের কিছুই জানিস না। শোন কাফের/নিধার্মিকরা যে বলে, মোহাম্মদ খাদিজাকে সম্পত্তির লোভে বিয়ে করেছিল সেটা এমনি এমনি বলে না, মোহাম্মাদ বিয়ের আগে গরীব ছিল সেটা সবাই জানে। আর এই তো দেখ, তুই নিজেই বলে দিলি, যে লোক সত্যিই কাউকে ভালোবেসে ২৫ বছর সংসার করবে, সে কি করে সেই বউ মারা যাবার কিছু পরেই একের পর এক বিয়ে করা শুরু করে। তুই কি জানিস খাদিজা মারা যাবার পরবর্তী ১০ বছরেই তোর রাসুল ১১টি বিয়ে(মতান্তরে ১৩টি) করেছিল, মানে গড়ে প্রায় ১টি বিয়ে বছরে, এর মানে কি বুঝলি!! অথচ খাদিজার সাথে ২৫ বছরের সংসারে একটা বিয়ের সাহসও করেন নাই, কারণ সব সম্পত্তির মালিক ছিল খাদিজা। এখানে OCCAM’S RAZOR (অনেক ব্যাখা থেকে সবথেকে কম কঠিন ব্যাখ্যাটি মেনে নেয়া) এপ্লাই করে দেখ।
এছাড়া খাদিজা কে বিয়ে করার আগেই কিন্তু উম্মে হানির (চাচাত বোন) সাথে মোহাম্মদের প্রেম ছিল, আবু তালেব সেই বিয়েতে রাজি ছিলেন না, তাই খাদিজার বিয়ের প্রস্তাব আসার সাথে সাথে খাদিজার সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। এমনকি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও নবী মুহাম্মদ উম্মে হানিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আবারো (সহিহ মুসলিম, হাদিস একাঃ,নাঃ ৬৩৫৩, মানঃ সহিহ), যা কিনা উম্মে হানি প্রত্যাখ্যান করে, যদিও মোহাম্মদের বিবাহের প্রস্তাব আরও বেশ কয়েকজন নারী প্রত্যাখ্যান করেছিল বলে সহিহ রেফারেন্সও আছে।
[সুত্র-আবু বক্কর সিরাজুদ্দিন/Martin Lings-মোহাম্মদ এর জীবনী: “প্রারম্ভিক যুগের তথ্যের ভিত্তিতে তার জীবন” এবং “আসহাবে রাসুলের জীবনকথা”, মহিলা সাহাবী, মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯৮]
-এটা তো জানতাম না, আমিত ভেবেছিলাম উনি হয়ত শোক কাটাতে অনেক অনেক বিলম্বে বাকি বিয়ে করেছিলেন। উনি যে খাজিদার মৃত্যুর পরে “বিয়ের সিরিয়াল” শুরু করেছিলেন তা জানতাম না!
-মজার ব্যাপার কি জানিস, খাদিজার বয়স যে বিয়ের সময় আসলেও ৪০ ছিল সেটা নিয়েও আছে অনেক বিতর্ক। প্রাচীন ইসলামিক ইতিহাসবিদরাও সন্দেহ করেছিলেন। তার বয়স নিয়ে কিন্তু স্পষ্ট কোন হাদিস নাই, অনেকেই বলেন মোহাম্মদ কে বিয়ের সময় তার বয়স ছিল আসলে ২৭/২৮/২৯।
এখানে আরও একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেখ, উনি নিজেই অল্প প্রয়োজনে/অপ্রয়োজনে একের পর এক বিয়ে করে গিয়েছেন,অথচ তার নিজের জামাতা আলী যখন অন্য বিয়ে করতে চেয়েছিল,উনি চরম বাঁধা দিয়েছিলেন(কারন নিজের মেয়ে কষ্ট পাবে বলে),কত বড় দ্বিচারিতা!!
কুতায়বা(রহঃ)…মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল(সা)কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরা, আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে শাদী দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে শাদী করতে পারে। কেননা, ফাতেমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।(সহিহ বোখারি, প্রকাঃ ইসলামিক ফাঃ, নাম্বারঃ ৪৮৫০, মানঃ সহিহ)
-(দীর্ঘশ্বাস ফেলে) জানি না, তবে একটু ঘাপলা মনে হচ্ছে আসলেই…
-কিন্তু দোস্ত আয়েশা কিন্তু অনেক জ্ঞানী ছিল, সে অনেক হাদিস বর্ণনা করে গেছিল
-আচ্ছা, তোর ছোট বোন মাইশার বয়স কত এখন?
-এইত ৭ বছর হবে।
-তুই কি বলতে পারিস সে এখনই কতটা বুদ্ধিমতী বা সে ভবিষ্যতে একজন বিজ্ঞানি হবে নাকি কবি? মানে তুই কি এখন তার জ্ঞানের লেভেল বলতে পারবি।
-নাহ এটা তো একেবারে ১০০% সম্ভব না,তবে কিছু একটা হয়ত আন্দাজ করা যেতে পারে, আর সেটাও যে সঠিক হবে এমন না,অনেকে আছে ছোট বেলায় চালাক এবং বুদ্ধিমান থাকে পরে আবার থাকে না। ভবিষ্যতে কি হবে সেটা তো বলায় যাই না।
-তাহলে ৬ বছরের পিচ্চি আয়েশা ভবিষ্যতে অনেক হাদিস মুখস্থ রাখবে এবং অনেক জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান হবে এইসব কি করে রাসুল বুঝল? আল্লাহ্ তো বলে নাই কোন আয়াতে/হাদিসে। আর উনার থেকেও বেশী হাদিস রচনা করেছেন অনেকেই।
আর মোহাম্মাদ তো তার শিশু বউকে সবথেকে বেশী ভালোবাসতেন,আয়েশার সান্নিধ্যে উনি সবথেকে বেশী সময় কাটিয়েছেন, তাই আয়েশাই সবথেকে বেশী জানবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
আচ্ছা রাসুল যদি ইসলামের প্রতিষ্ঠার কাজেই আয়েশাকে নিজের কাছে রাখতে চায়, তো উনি কি নিজের নাতনি বানিয়ে নিতে পারতেন না? বা জায়েদ এর মত করে দত্তক করে নিতে পারতেন না? শিশু মেয়েকে বিয়ে করেই সাথে রাখতে হবে কেন? সর্বজ্ঞানী আল্লাহপাক ইসলামের খেদমতে একজন শিশুকে অন্য কোনভাবে তার রাসুলের সান্নিধ্যে রাখার উপায় পেলেন না?
আর তোদের সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ কি এর থেকে ভালো বিকল্প কিছু পেলেন না? উনার আগেই শিশু মেয়েকে সপ্নে দেখাতে হবে কেন? উনার নিজের ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্যে উনাকে কি একটা বাচ্চা মেয়ের কাছেই ধর্না দিতে হবে? উনি কি আসে পাশের অন্য কোন জ্ঞানী,প্রজ্ঞাবান প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে খুজে পেলেন না? অথবা সর্বশক্তিমান কি আগে থেকেই অন্য ঘরে উনার প্রয়োজনমত একজন বিজ্ঞ,শিক্ষিত সাবালিকা গড়ে তুলতে পারলেন না? উনি তাহলে কি সর্বজ্ঞানী আর সর্বশক্তিমান হলেন যে উনার শিশু মেয়ের কাছেই ধর্না দিতে হবে? সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ কি উনার দূরদৃষ্টি দিয়ে মুসলিমদের এই বিপদ আঁচ করতে পারেননি, যে এই নিয়ে ভবিষ্যতে মুসলিমদের সবথেকে বেশী দুর্ভোগ পোহাতে হবে?
আর তুই কোন PEER REVIEWED SCIENTIFIC JOURNAL তে এই তথ্য পেয়েছিস যে মেয়েরা ছেলেদের থেকে “ঠিক ১০ গুন” তাড়াতাড়ি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায় মানসিক এবং শারীরিকভাবে? কোন বিজ্ঞানি এই তথ্য দিয়েছেন? তুই তো সেই ছেলে যে পত্র-পত্রিকা আর ইউটিউব ভিডিও দেখে তথ্য দেস, এই প্রমান তো আগেই করেছি আমি। আর তোকে এটা প্রমান করতে হবে যে ৬ বছরেই একটা মেয়ে একটা ছেলের থেকে ১০ গুন মেচিউর হয়ে যায় এবং সেই মেচিরিউটি বিয়ে করার জন্যে উপযুক্ত। তুই মনে হয় EMOTIONAL MATURITY সাথে PHYSICAL MATURITY প্যাঁচ লাগিয়ে ফেলেছিস রে!! বেশির ভাগ গবেষণা করা হয়েছে EMOTIONAL MATURITY এর উপরে,তোকে প্রমান করতে হবে ১০ গুন PHYSICAL MATURITY এর ব্যাপারে।
তোকে বরং আমি নির্ভরযোগ্য তথ্য দেই শোন, ২০১৩ তে PEER REVIEWED SCIENTIFIC JOURNAL- CEREBRAL CORTEX এর একটি পাবলিকেশনে, NEWCASTLE UNIVERSITY, UK এর DR MARCUS KAISER বলেন যে আমাদের মস্তিস্কের অকেজো নিউরোন সংযোগগুলাকে মস্তিক্স PRUNING করে বাদ দেয় এবং এই প্রোসেস মেয়েদের শুরু হয় ১০ থেকে ১২ বছর এর মধ্যে, অন্যদিকে ছেলেদের শুরু হয় ১৫-২০ বছর বয়সে। এবং পুরা ব্যাপারটা COGNITIVE & EMOTIONAL অংশে ঘটে। এটা শারীরিক মেচিউরিটি/PHYSICAL MATURITY নিয়ে কোন গবেষণা নয়। তুই হয়ত কারো কাছ থেকে শুধু “দশ” শুনে ভেবে নিয়েছিস – “দশ গুন সব কিছুতেই”। ভবিষ্যতে যা বলবি অথেনটিক রেফারেন্স দিবি। তোর অভ্যাস দেখি “ঝড়ে পড়া” জোকার নায়েকের মত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন, রেফারেন্স ছাড়া বিজ্ঞানের কথা বলিস!!
[সুত্রঃ “Preferential Detachment During Human Brain Development: Age- and Sex-Specific Structural Connectivity in Diffusion Tensor Imaging (DTI) Data”, PEER REVIEWED, CEREBRAL CORTEX]
তুই কি জানিস যে স্বাভাবিক অবস্থায় মেয়েদের ৯ বছরের আগে PUBIC HAIR তৈরি হয় না, আবার শারীরিক সক্ষমতা!! আর পিরিয়ড হওয়া মানেই সে শারীরিকভাবে বাচ্চা ধারনে সক্ষম এমন নাও হতে পারে। যদিও আমরা জানি ১৩/১৪ বছর হলো মেয়েদের মাসিক রজস্রাব হওয়ার সাধারন সময়। ব্যাতিক্রম হিসাবে কোন কোন মেয়ের ৭/৮ বছরেও হতে পারে যা নিতান্ত অস্বাভাবিক (PRECOCIOUS PUBERTY)
এছাড়া বহু PEER REVIEWED পেপার আছে PUBERTY এবং ADOLESCENCE নিয়ে, একটু পড়ে দেখিস, কোন পেপার পাবি না যে স্বাভাবিক অবস্থায় ৬-৯ বছরে কোন মেয়ের বয়ঃসন্ধি/PUBERTY হয়। তোর রাসুল কিন্তু ৯ বছর (মতান্তরে ৮ বছর) বয়সেই সহবত শুরু করে দিয়েছিল..আর এই শিশুকে বিয়ের চিন্তা মাথায় এসে গিয়েছিল ৬ বছর বয়সেই!!
এছাড়া EMOTIONAL MATURITY এবং PHYSICAL MATURITY মাঝে তফাৎ আছে। আবার সেই EMOTIONAL MATURITY আসলেও তার পরিপূর্ণতার ব্যাপারও আছে। ম্যাচুরিটি আসা মানেই তা পরিপূর্ণ নয়, এছাড়া বিয়ের জন্যে শারিরিক ও মানসিক পরিপূর্ণতা আলাদা বিষয়।
-হুম,সেটা ঠিক বলেছিস…
-আচ্ছা ধর তোর বোন মাইশা পড়ালেখা শেষ করে ২৫ বছরে পা দিল, বিয়ের জন্যে দুটো পাত্র আসল, একজনের বয়স ৩০, আরেকজনের বয়স ৫৫, তবে ৫৫ বছর বয়স যিনি তিনি অনেক বিখ্যাত এবং ধনী। তুই কার সাথে বিয়ে দিবি?
-অবশ্যই ৩০ বছরের সাথে, কারণ বয়সের পার্থক্য কম, তাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হবে, এছাড়া মনের মিল বা শারীরিক একটা সামঞ্জস্যতাও আছে বটে। আমার বোন ৩৫ মানে সেই বুড়ো ব্যাটার তখন ৬৫,সেতো ৫৫ বছর বয়সেই আমার বোনের চাহিদা মেটাতে পারবে কিনা সন্দেহ!হা হা …
-ঠিক তাই,বয়সের সামঞ্জস্যতা এখানে আসল ব্যাপার,তাহলে যেই মেয়ের বয়স ৬ বছর,তাকে তুই বেশির বেশী হয়ত ১০-১২ বছরের কারো সাথে বিয়ে দিতে পারিস (যদিও অপরাধ হবে), তাহলে সেই তুই কি করে রাসুলের মত ৫১ বছরের বয়স্ক একজন লোককে, একটা ৬ বছরের বাচ্চা মেয়ের সাথে বিয়ে দেয়ার যৌক্তিকতা খুজে পাস? ৬ বছরের বাচ্চাদের তো আমরা কোলে তুলে নেই। আয়েশা তখন পুতুল খেলত (সহিহ হাদিস অনুযায়ী)।
আর আয়েশার সাথে আগে যার (জুবায়ের) বিয়ের কথা ছিল,সেকি ৫১ বছরের বয়স্ক ছিল রে??
-হুম,তা ঠিক, বয়সের সামঞ্জস্যতার ব্যাপারটা খেয়াল করি নাই অবশ্য।
-আচ্ছা ধর, তোর বোন ক্লাস এইটে পড়ে,সে পাড়ার কোন ছেলের প্রেমে পড়েছে, তারা বাসা থেকে বের হয়ে গেল দুজনে বিয়ে করবে বলে। দুজনেই এই বিয়েতে রাজি, ছেলের বয়স ২২, এমনকি ছেলের বাবা-মাও রাজি, ছেলে ধনী বলে তোর বাবা-মাও গররাজী, এখন তুই কি করবি?
-তারে জোর করে ধরে এনে বাসায় আটকে রাখব,ফাজলামি নাকি,ক্লাস এইটে বিয়ে!
-কিন্তু তার তো এই বিয়ে তো মত আছে রে,সেতো রাজি,তাদের বাবা-মাও রাজি,সবাই রাজি।
-ফাজলামি কথা বার্তা, ক্লাস এইটের মেয়ের কি বিয়ে করার জন্যে মানসিক পরিপক্কতা এসেছে? সে যদিও কোনভাবে ধরেও নেই শারীরিকভাবে সক্ষম, কিন্তু অই বয়সে তার বিয়ে করার মত মানসিক পরিপক্কতা আসে নাই, সব থেকে আসল ব্যাপার সে AGE OF CONSENT এ উপনীত হয় নাই। সে বিয়েতে রাজি হলেও তার মতামতের মূল্য নাই, কারণ মতামত দেয়ার মত বয়সই তার হয় নাই-যাকে বলে AGE OF CONSENT। আমার বাবা-মা, তার বাবা-মা, এমনকি পুরা দেশ রাজি থাকলেও তাতে যায় আসে না, কারণ তার AGE OF CONSENT হয় নাই।
-একেবারে পারফেক্ট বলেছিস রে, এই না হল আসল মুক্তমনার মত কথা। শোন তাহলে ৬ বছরের বাচ্চার কি করে AGE OF CONSENT হয়? তখন কি করে এই যুক্তি দেস যে আয়েশার বাবা রাজি ছিল, মোহাম্মদ রাজি ছিল, আয়েশা রাজি ছিল,তাই বিয়ে সঠিক ছিল! আয়েশার তো AGE OF CONSENT ই ছিল না।
-হুম,তা অবশ্য একটা চিন্তার বিষয়..
-আচ্ছা ধর তুই তোর সব থেকে কাছের একজন প্রতিষ্ঠিত এবং সৎ বন্ধুকে অনেক ভালোবাসিস। তোদের আগে থেকেই অনেক ভালো সম্পর্ক। তোর একটা ছোট বোন আছে যার বয়স ২৫, আর তোর বন্ধুর বয়স ৩০। একদিন তোর সেই প্রতিষ্ঠিত বন্ধু হঠাৎ করে তোর বোনকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসল, তুই তখন কি করবি?
-আমিতো অনেক খুশি হয়ে যাব,খুশিতে তাকে জড়িয়ে ধরব,কারণ ভালো ছেলে পাওয়া কষ্টের ব্যাপার, যাকে অনেক আগে থেকেই চিনি এবং সৎ বলে জানি সে যদি বিয়ে করতে চায় আমার তো খুশিতে আটখানা হয়ে যাবার কথা।
-তাহলে মোহাম্মদ যখন আবু বকর কে প্রথম বিয়ের প্রস্তাব দিল,তখন আবু বকর কই খুশিতে মোহাম্মদকে জড়িয়ে ধরে বলবে,‘আমিতো এতদিন এই খবর শোনার অপেক্ষায় ছিলাম।’, তা না করে আবু বকর বললেন- “আমি তো তোমার ভাই,এটা কি করে সম্ভব?” (সহিহ বুখারি, ভলিউম-৭, বই- ৬২, নং-১৮)
এটা শুনে কি তোর আসলেই মনে হয় যে আবু বকর এই বিয়েতে খুব খুশি ছিলেন? আর আবু বকর কি জানতেন না যে তার একই মায়ের পেটের ভাই মোহাম্মদ নন,তাই এই বিয়ে অযৌক্তিক কিছু নয়,তাও উনি খুশি হয়ে বুকে জড়িয়ে না ধরে, উল্টা কিছুটা আপত্তিসুচক কথা কেন বললেন? আবু বকরের এই মন্তব্যে বিয়ের প্রস্তাবে বিব্রত হওয়ার আভাস একেবারে পরিষ্কার।
আবু বকর তো তার দশ বছর আগে থেকেই মোহাম্মদের খাস দাসানুদাস হয়ে গিয়েছিল, তার কথায় ওঠে-বসে, এমনকি তার আজগুবি কথাবার্তাকেও ( যেমন মিরাজের কেচ্ছা) সে বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করে। তার শিশু বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করে তো নতুন করে কোন সম্পর্ক স্থাপনের কোন দরকার এখানে অত্যাবশ্যক দেখা যায় না। জোর করে যুক্তি গেলাতে চাচ্ছিস নাকি?
-অ্যাঁ…তাত জানতাম না, উনি এরকম কিছু বলেছিলেন নাকি !! নো কমেন্ট…
-তুই কি জানিস, তোর রাসুল নিজেও দাসী সেক্স করে গেছিল?
-নাহ, কি বলিস, সেরকম তো কখনও তো শুনি নাই
-উনার একজন দাসী ছিল, মারিয়া কিবতিয়া, যাকে মিশরের শাসকের কাছ থেকে উনি গিফট হিসেবে পেয়েছিলেন। মারিয়া কিবতিয়ার গর্ভে মোহাম্মদের এক ছেলেও হয়েছিল,নাম -ইব্রাহীম। এই ব্যাপারে কোন আলেমের দ্বিমত নাই। মারিয়া কিবতিয়ার সাথে উনার কোন বিয়ে হয় নাই, বিয়ে হওয়ার প্রশ্নও আসে না,কারণ তাকে তো সেক্স করার জন্যেই গিফত পেয়েছিলেন। এই জন্যেই তাকে উম্মুল মুমেনিন ধরা হয় না। এই ব্যাপারেও বিখ্যাত IFTA এর ফতোয়া আছে।
IFTA প্রশ্নঃ মারিয়া আল কিবতিয়া কি নবির স্ত্রী ছিলেন সেই হিসাবে উনি কি উম্মুল মুমেনিন (মুমিনদের মাতা)?
উত্তরঃ ফাতওয়া নং ৫৮৪৮। “মারিয়া আল কিবতিয়াকে নবী মিশরের শাসন কর্তা (আল মুয়াকিস) থেকে উপহার হিসাবে পেয়েছিলেন, উনাকে নবির পত্নী বা উম্মুল মুমেনিন (মুমিনদের মাতা) হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। মারিয়া আল কিবতিয়া যুদ্ধ বন্দিনী ছিলেন যা নবির ডান হস্তের অধিগত ছিল (কাজেই বিবাহ ছাড়াই উনি নবির জন্য হালাল ছিলেন)। উনি ইব্রাহিম নামে নবির ঔরসজাত সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, সেই কারনে উম্ম ওয়ালাদ (সন্তানের মাতা) উপাধি পেয়েছিলেন।”
এই মারিয়া কিবতিয়া যে নবীর বউ ছিলেন না,তা আরেকভাবে প্রমান করা যায়। দাসী মারিয়াকে কেন্দ্র করে নবীর অন্য বিবিদের সাথে যে রাগ গোস্বা চলছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে সুরা আত তাহারিম এর প্রথম কয়েকটি আয়াত নাজিল হয়। বিবি হাফসাকে রাসুল কোন কাজে তার পিতা ওমরের বাসায় পাঠিয়ে দেন বা উনি নিজেই যান। এরপর বিবি হাফসার ঘরে তারই বিছানায় নবী মোহাম্মদ দাসী মারিয়ার সাথে যৌন সঙ্গম করেন,বিবি হাফসা কি মনে করে ফিরে আসেন, এবং নবীকে তারই বিছানায় মারিয়া কিবতিয়ার সাথে…অবস্থায় দেখে স্বভাবতই খুবই রেগে যান। নবী এটিকে বিবি আয়েশার কাছ থেকে গোপন রাখতে বলেন। তখন উদ্ভূত বিপদ থেকে বাঁচতে নবী মারিয়াকে নিজের জন্যে হারাম করে নিলেন। আর ঠিক তখন কি হল জানিস?
-কি হল? বাকি বউরা সবাই জেনে গেল নাকি?
-আরে নাহ, ঠিক তখন স্বয়ং আল্লাহ্ নবীর সাথে দাসী মারিয়ার সহবত (সেক্স) চালু রাখার জন্যে আয়াত নাযিল করলেন। সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ কি করে নবীর ইচ্ছা না মিটিয়ে বসে থাকেন?
(৬৬ নাম্বার সূরা আত তাহরিম, ১-২)-”হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল,দয়াময়। আল্লাহ তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।”
[সুত্রঃ তাফসিরে ইবনে কাসির, অনুবাদ- ডঃ মুহাম্মাদ মুজীবুর রহমান, এছাড়া ডঃ ইয়াসির কাধিও এক ভিডিওতে এটা ব্যাখা করেন]
কি আজব কথা দেখ, যিনি আল্লাহর নবী, শ্রেষ্ট নবী, সারা জাহানের আদর্শ সকল যুগের জন্য তিনি যখন তখন দাসী বাদীর সাথে বিয়ে ছাড়াই যৌন আনন্দে মেতে উঠছেন। মারহাবা! আবার তিনি বলছেন – তার এ জীবনাদর্শ সবাইকে কঠোর ভাবে অনুসরন করতে। আবার আল্লাহপাক তার সেই কাজের অনুমোদনে সাথে সাথেই আয়াত নাযিল করে যাচ্ছেন (অইদিকে অনেক জরুরি বিষয়ে কুরআনে কিছুই বলা নাই!)
তুই কি জানিস, আল্লাহ্পাক এইভাবে প্রতি পদে পদে তার পেয়ারা রাসুল কে সাহায্য করার জন্যে সাথে সাথে অহী নাযিল করতেন, বিশেষ করে সেটা যদি হত রাসুলের সেক্স বা বিবাহ সঙ্ক্রান্ত, আল্লাহ্ এই ব্যাপারে খুব তৎপর ছিলেন। আল্লাহ্র এই অধিক তৎপরতার!! ব্যাপারটা আয়েশাও টের পায়।
তাই তিনি একদিন বলেই বসলেন-
ইবনু সালাম (রহঃ)…হিশামের পিতা উরওয়া থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, যে সব মহিলা নিজেদেরকে নাবী (সা)এর নিকট সমর্পণ করেছিলেন, খাওলা বিনতে হাকীম তাদেরই একজন ছিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, মহিলাদের কি লজ্জা হয় না যে, নিজেদের পুরপুরুষের কাছে সমর্পণ করছে? কিন্তু যখন কুরআন এ আয়াত অবর্তীর্ণ হল- “হে মুহাম্মাদ! তোমাকে অধিকার দেয়া হল যে নিজ স্ত্রীগণের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা আলাদা রাখতে পার।” আয়িশা (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মনে হয়,আপনার রব আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করার ত্বড়িৎ ব্যবস্থা নিচ্ছেন। উক্ত হাদীসটি আবূ সাঈদ মুয়াদ্দিব, মুহাম্মাদ ইবনু বিশর এবং আবদাহ্ হিশাম থেকে আর হিশাম তার পিতা হতে একে অপরের চেয়ে কিছু বেশী-কমসহ আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। (সহীহ বুখারী,ইসলামিক ফাঃ, ৪৭৪০, মানঃ সহিহ)
তাফসিরে ইবনে কাসির (ইসলামিক ফাঃ,পৃষ্ঠা ১৩৬,১৩৭, সূরা আহজাবের ৫০/৫১ ব্যাখা) একই হাদিস বর্ণনায় যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা অত্যন্ত সৎ, উনি বাকিদের মত ইচ্ছে করে SUGARCOAT/ভাষায় সৌন্দর্য আনেন নাই, উনি অনুবাদ করেছেন, “ আয়েশা (রা) রাসুল(সা) কে বলিলেন, আপনার প্রতিপালক দ্রুত আপনার চাহিদা মুতাবিক হুকুম নাযিল করেন”, ইবনে কাসির সেখানে ব্যাখায় আরও উল্লেখ করেন রাসুল মোহর ছাড়াই যেকন নারীর সাথে সহবত/সেক্স করতে পারতেন, কারন উনি রাসুল!
তুই কি জানিস যে,তোর রাসুল নিজে তার মেয়ের জামাই আলী কে সেক্স করার জন্যে নারী দিতেন (গনিমতের মাল হিসেবে)
বুরাইদা কর্তৃক বর্ণিতঃ “নবী আলীকে ‘খুমুস’ আনতে খালিদের নিকট পাঠালেন (যুদ্ধলব্ধ মালের নাম খুমুস)। আলীর উপর আমার খুব হিংসা হচ্ছিল, সে (খুমুসের ভাগ হিসেবে প্রাপ্ত একজন যুদ্ধবন্দিনীর সাথে যৌনসঙ্গমের পর) গোসল সেরে নিয়েছে। আমি খালিদকে বললাম- “তুমি এসব দেখ না”? নবীর কাছে পৌছলে বিষয়টি আমি তাকে জানালাম। তিনি বললেন- “বুরাইদা, আলীর উপর কি তোমার হিংসা হচ্ছে”? আমি বললাম-“হ্যা,হচ্ছে”। তিনি বললেন-“তুমি অহেতুক ইর্ষা করছ, কারণ খুমুসের যেটুকু ভাগ সে(আলী) পেয়েছে তার চেয়ে আরও বেশী পাওয়ার যোগ্য সে(আলী)”। (সহিহ বুখারি, তাওহিদ প্রকাঃ,নাঃ ৪৩৫০, মানঃ সহিহ)
-তোর এইসব হাদিস কিন্তু আমি জীবনে শুনি নাই, এইসব হাদিস নিয়ে তো ইমাম/আলেমরা কোন কথা বলেন না। উনারা তো সব সুন্দর সুন্দর আয়াত আর হাদিসগুলাই বলেন মাঠে ময়দানে এবং মসজিদের খুৎবায়।
-হা হা, এটাই তো কাহানী বন্ধু, এইসব নিয়ে কথা বললে তো আম-আদমির ঈমান চলে যাবে, আর উনাদের ধর্ম ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাবে।
আচ্ছা, ধর তুই একজন সৈনিক, যুদ্ধে তোরা পরাজিত হলি। এরপর তোর বউর সামনে তোকে, তার বাবাকে হত্যা করা হল, তাহলে সেই হত্যাকারীর উপর তোর বউয়ের কি ফিলিং (তাও আবার ভালবাসার অনুভব!!)হতে পারে।
-বলিস কি! সে ক্রুদ্ধ হয়ে যাবে,পারলে তাকেও হত্যা করবে,এটা আবার বলার লাগে নাকি…
-কিন্তু তোর রাসুল, সুন্দরী সাফিয়্যার বাবা এবং স্বামী কে হত্যা করে তার সাথে সেক্স করার জন্যে বিছানায় নিয়েছিলেন। রাসুলের কি তখন বউ এর অভাব ছিল? অন্য কোন সাহাবির হাতে সাফিয়াকে দিতে পারল না? উনার এত দরদ উঠলিয়ে পড়েছিল যে পরিবারের লোক হত্যা করে তার সাথেই সহবত করতে হবে? যেহেতু উনি নিজেই তার পরিবারের লোকজন হত্যা করেছেন, তাই উনি নিজের বিছানায় না নিয়ে অন্য ভাল বিকল্প বের করতেই পারলেন না?
(সহিহ বুখারী,ইফাঃ, নাঃ ২৬৯৪ এবং আবু দাউদ,ইসলামিক ফাঃ,নাম্বারঃ ২৯৮৪, মানঃ সহিহ)
তুই কি ভেবে দেখতে পারিস,কত জঘন্য হতে পারে ব্যাপারটা?
-হুম,আসলেই ব্যাপারটা এমন হয়ে থাকলে খুবই আপত্তিকর,উনি অন্য কোন সাহাবির হাতে দিতে পারতেন বা পালিত মেয়ের মত করেও রাখতে পারতেন। বিকল্প অবশ্যই ছিল তখন।
-আচ্ছা, তোর বউত মাশাল্লা অনেক শিক্ষিত, তোদের মাঝে কি ঝগড়া বিবাদ হয় মাঝে মাঝে?
-খুবই কম,না বললেই নয়। আর রাগের থেকে অভিমান বেশী। শিক্ষিত মেয়ে,মানসিকতা উন্নত।
-তুই কি ঝগড়া হলে তোর বউকে কখনও মাইর/প্রহার দিবি?
-ফাজলামি করার জায়গা পাস না? প্রথমত বউ কি শুধু ভোগ আর মাইরের জিনিস নাকি? মাইর দেয়া তো দুরের কথা, তুই যদি কোন নারীকে মাইর দেয়ার ইঙ্গিতও দিয়ে থাকিস, সেটাও জঘন্য ব্যাপার এবং অনৈতিক। একমাত্র কাপুরুষরাই নারীদের গায়ে হাত তোলে। আর আমি যদি মাইর দিতে পারি,সেও দিতে পারবে না কেন? কিসব গা-গুলানি অনৈতিকতার কথা বলিস!! চিন্তাও করা যায় না এই যমানায়!
-হা হা, সেটাই ভালো,আমি জানতাম,তুই এইরকম উত্তর দিবি, কিন্তু চিন্তা করে দেখ, সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ কুরআনে বলেছেন, শুধুমাত্র পুরুষরা চায়লে নারীদের কে মাইর দিতে পারবে। এখানে উল্লেখ্য যে মাইর কিভাবে দিবে সেটা কুরআনে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে বলেনও নাই।
“আর যাদের (স্ত্রীদের) মধ্যে কোন অবাধ্যতা খুঁজে পাও তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্যে অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না”- ৪ নাম্বার সূরা নিসা আয়াত ৩৪
-এটা শুনেছি আগে, কিন্তু মাইর/প্রহার দেয়ার আগে তো কিছু শর্ত আছে দোস্ত।
-হা হা, মাইরের আগে আবার শর্ত, এইমাত্র তো তুই বললি যেকোনো অবস্থায় তুই মারবি না, এটা চিন্তা করাই অসুস্থতা, আর একজন সর্বশক্তিমান এবং সর্বজ্ঞানী স্রষ্টার মুখ দিয়ে “স্ত্রীকে মাইর/প্রহার” শব্দ বের হওয়াই আশ্চর্যের ব্যাপার। মাইর তো মাইর, তার আবার আগে পিছে শর্ত দিয়ে লাভ কি!! এটা তো ব্যাথা পাওয়ার প্রশ্নই নয়।
এমনকি এখানে প্রতীকি প্রহার বলেও কিছু বলা হয়নি, বিখ্যাত অনেক তাফসিরকারক (যেমন আল্লামা হাফেজ ইমদাদুদ্দিন ইবনে কাসির প্রমুখ) কিন্তু তোদের মত ত্যানা পেঁচিয়ে একে প্রতীকী প্রহার/Symbolic বলেননি। তারা স্পষ্ট প্রহার বলেই তাদের তাফসিরে ব্যাখা করেছেন।
এই হাদিস দেখ,তোর পেয়ারা রাসুল কিভাবে বউ পিটাতে হবে সে উপায়টাও বলে দিচ্ছেন, মানে প্রহার কর,তবে মুখে আঘাত করতে মানা করেছেন (হাসান হাদিস আমলযোগ্য)।
হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ ‘তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে’।(আবূ দাউদ,তাহকিককৃত,নাঃ ২১৪২, মানঃ হাসান)
সবথেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হল রাসুল “পরোক্ষভাবে” এও বলে গিয়েছিলেন, যে উনি চাইতেন স্ত্রীরা তার জামাই কে সেজদাহ করুক।
কায়স ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,“আমি (ইরাকে অবস্থিত, কূফার সন্নিকটবর্তী) ‘হীরা’ শহরে গিয়ে দেখতে পেলাম যে, তারা তাদের নেতাকে সম্মানার্থে সিজদা করছে। এটা দেখে আমি মনে মনে বললাম,নিশ্চয় রাসুল(সা)ই সিজদা পাওয়ার সর্বাধিক উপযুক্ত। অতঃপর আমি রাসুল(সা)-এর নিকট এসে বললাম, আমি হীরা’র সফরে দেখতে পেলাম যে, সেখানকার অধিবাসীরা তাদের নেতাকে সিজদা করে। আমি স্থির করেছি যে, আপনিই সাজদার অধিক হকদার। এ কথা শুনে তিনি (রাসুল) জিজ্ঞেস করলেন, (তবে কি আমার মৃত্যুর পরে) তুমি আমার কবরের সম্মুখ দিয়ে গমনকালে কবরকে সিজদা করবে? উত্তরে আমি বললাম, (নিশ্চয়) না। তিনি (রাসুল) বললেন, না, (কস্মিনকালেও) করো না। কেননা আমি যদি (আল্লাহ ব্যতিরেকে) অপর কাউকে সিজদা করতে বলতাম তবে স্বামীদের জন্য রমণীদেরকে সিজদা করার নির্দেশ করতাম।” (আবূ দাঊদ ২১৪০, মানঃ সহিহ এবং অন্য ভাষায় উল্লেখ আছে ইবনে মাজা,তাওহিদ প্রকাশনী, নাঃ ১৮৫৩, মানঃ হাসান )
এই হাদিসটি নিয়ে আমি বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, রাসুল বলেছেন স্ত্রীদের কম কম প্রহার করতে কারন দিন শেষে (মানে রাতের বেলা) তো স্ত্রীদের সাথেই “মিলিত” হতে হবে!! মানে রাতে বিছানায় স্ত্রীদের কাছে যেতে তো হবেই,সহবাসে সমস্যা যাতে না হয়,তাই গোলামের মত প্রহার করতে নিষেধ করেছেন,তবে একেবারে প্রহার করতে নিষেধ করেননি কিন্তু!
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ)…আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সা)বলেছেন, “তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মতো প্রহার করো না। কেননা, দিনের শেষে তার সাথে তো মিলিত হবে”।(সহিহ বুখারি, ইসলামিক ফাঃ, নাঃ ৪৮২৫, মানঃ সহিহ)
এই হাদিসে তো রাসুল পরোক্ষভাবে প্রহার করতে প্ররোচনাও দিয়ে দিয়েছেন। উনি বলেনঃ
“স্ত্রীকে কেন প্রহার করা হলো সে বিষয়ে শেষ বিচারের দিন তাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না” [আবু দাউদ,বই নং-১১,হাদিস-২১৪২,হাদিসটি অনেকে দুর্বল,আবার অনেকে হাসান বলেছেন]
আরেকটি খুব মজার হাদিস জেনে রাখ, তুই (স্বামী) ডাকা মাত্র তোর স্ত্রীকে তোর সাথে সেক্স করার জন্যে সাড়া দিতেই হবে, তোর স্ত্রী যতই ব্যস্ত বা যেখানেই থাকুক (উল্টোটা কিন্তু আবার বলা হয়নি)। রাসুল বলেছে তোর মনে যদি বিশেষ খায়েস!!জাগে আর তোর বউ উটের পিঠেও থাকে, তাহলেও তাকে তোর ডাকে সাড়া দিতে হবে…
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুআয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নাবী(সা)-কে সাজদাহ করেন। নাবী(সা)বলেনঃ হে মু‘আয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সাজদাহ করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করবো। রসূলুল্লাহ(সা)বলেনঃ তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ছাড়া অপর কাউকে সাজদাহ করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সাজদাহ করতে। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রী শিবিকার (অথবা উট/ইংলিশ ভার্সন – Camel Saddle) মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত। (ইবনে মাজা,তাওহিদ প্রকাঃ, নাঃ ১৮৫৩, মানঃ হাসান)
আচ্ছা আমাকে বল তুই কি অসুখ হলে নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে দিবি অথবা অসুস্থ জানলে কোন ভদ্র, ভাল, সৎ নারীকে বিবাহ করতে অস্বস্তিবোধ করবি?
-আরে নাহ মাথা খারাপ, এইসব কোন আমলের কথা বাত্রা! আমি নিজেই তো অসুখে পরতে পারি। এমনকি আমার নিজেরও “গোপন” সমস্যা থাকতেই পারে। বরং অসুখ বিসুখ তো আল্লাহপাকের হাতে, তাই না?
-বাহ ভালই বলেছিস, অবশ্যই একজন শিক্ষিত ভদ্রলোক তোর মতেই ভাববে, কিন্তু রাসুল কি করেছে শোন। কুষ্ঠ হওয়ায় নিজের এক স্ত্রীকে (আমরা বিনতে ইয়াযিদকে) তালাক দিয়েছিলেন, যিনি(রাসুল) কিনা অলৌকিক মোজেজার অধিকারী ছিলেন, যিনি স্পর্শ করলেই অলৌকিক কুদরতে কুষ্ঠ রোগী ভাল হয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল,যার মুত্র/প্রসাব খেয়ে আরেক সাহাবি আজীবন পেটের পীড়া থেকে রেহাই! পেয়েছিলেন,যাকে আল্লাহ পাক সবচেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছেন, তিনি রোগাক্রান্ত বলে সেই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, আল্লামা ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮৬ এবং The History of al-Tabari, Vol 39, p 188 Biographies of the Prophet’s Companions and Their Successors/ Translated and annotated by Ella Landau-Tasseron)
এইবার জোরে চিল্লান দিয়ে বল, নিধার্মিকদের ফাসি চাই,আমার পেয়ারা আল্লাহর রাসুল নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছে। তলোয়ার নিয়ে মাথে নেমে যা, নিধার্মিকদের হত্যা করতে। দুনিয়াতে প্রায় ১.২ বিলিয়ন নিধার্মিক/অজ্ঞেবাদি আছে, কয়জন কে হত্যা করবি। উল্টো নিধার্মিক/কাফের প্লাটফর্ম ছাড়া তো তোদের চলেই না। নিধার্মিকরা যা বলে তা সব তোদেরই সহিহ রেফারেন্স থেকে বলে, তফাৎ হচ্ছে তোদের আলেমরা যেটা বলেন না, আমরা জাস্ট তোদের সামনে তুলে ধরি, বাকি কাজ এমনি এমনি হয়ে যায়, সেই হিসেবে আমাদেরকেও ইসলামিক শিক্ষক বলতে পারিস। মজার ব্যাপার হচ্ছে USA এর নামকরা PEW RESEARCH CENTER এক পরিসংখ্যানে বলেছে যে আমিরিকার নিধার্মিক/অজ্ঞেয়বাদি ইত্যাদি ব্যাক্তিগন ধর্ম বিশ্বাসীদের থেকে বেশি ধর্ম জানেন। হতে পারে সারা দুনিয়াতেও একই ফলাফল আসবে, কারন আস্তিক হতে গেলে কিছুই করতে হয় না, কোন কষ্ট নাই, কোন খাটনি নাই, জাস্ট বাপ-দাদার ধর্ম বিশ্বাস করে নিলেই হয়,যে যে ঘরে জন্ম নিবে, সে সেই ঘরের ধর্ম মানবে এবং তার জন্যে জান দিবে। কিন্তু নিধার্মিক/অজ্ঞেয়বাদি হতে গেলেই তোকে জ্ঞানার্জন শুরু করতে হবে, তোকে বুঝতে হবে কেন তোর বিশ্বাসে ঘাপলা আছে, কেন অন্য বিশ্বাসগুলোও মানা যাবে না,বিজ্ঞান, ফিলোসপি ইত্যাদি নিয়ে জানতে হবে, নিজের বিশ্বাস কে চ্যালেঞ্জ করতে হবে,যেটা করার সাহস এবং জ্ঞান সবার হয় না। তাই অলস মানুষ কেন নিধার্মিক/অজ্ঞেয়বাদি হবে তুই বল। কে এত জানতে চায়, কে সমাজের বিরুদ্ধে যেতে চায়, কে চায় নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে। তাই তো দেখবি বিশেষ বিশেষ দিনে মসজিদে উপচে পড়া ভিড়, কিন্তু ৫ ওয়াক্ত নামাজে কাউকে পাবি না। ইসলামের বেসিক ব্যাপারগুলো নিয়ে আম- আদমি কে জিজ্ঞেস করে দেখ, উত্তরটা নিজেই পেয়ে যাবি। নিধার্মিক/অজ্ঞেয়বাদি হওয়া সবার কম্ম নয় রে বাপু!