অর্থনীতি ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞ জিম পাউয়েল ফোবস ম্যাগাজিনের একটি লেখায় ( “কিভাবে গণতান্ত্রিক দেশে ডিক্টেটর ক্ষমতায় আসে”) দেখিয়েছেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ডিক্টেটর তৈরি হয় খারাপ, অযোগ্য ও ব্যর্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে।
তার হিটলারের ক্ষমতায়নের ধাপগুলোর সাথে মিলিয়ে বাংলাদেশের বেলায় বলা যায়- খালেদা তারেকের নজিরবিহীন আকাম-কুকামের ব্যর্থ পরিস্থিতিতে বিপুল ক্ষমতা নিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা, বিরোধী দলের কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক তত্ত্বাবধায়ক শব্দ ছাড়া আর কোন ক্রিয়েটিভ শব্দ না পাওয়া, কেন ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া উচিত- এমন শক্ত কোন ফর্মুলা কোন বিরোধীদের কাছ থেকে না পাওয়া, উল্টা ধর্মীয় জোস দিয়ে নিজেদের সকল আকাম-কুকাম জায়েজ করে নেয়ার মত একটা রাজনৈতিক দল বেপরোয়া ডিক্টেটর হতে বাধ্য।
আর এখানেই আসে সেই পার্সিয়ান রাজা আর্ডাসির টেস্টামেন্ট-
“ কিংশিপ (বা স্বৈরতন্ত্র) এবং ধর্ম হল যমজ ভাই। কোনটিই একা টিকতে পারেনা। ধর্ম হল স্বৈরতন্ত্রের ভিত্তি আর স্বৈরতন্ত্র হল ধর্মের গ্রোয়ার ও রক্ষক। “
স্বৈরতন্ত্রে আমিত্বের প্রভাব রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে এবং এই আমিত্বের সাথে ঈশ্বরের হুবহু মিল থাকে। যেমন ঈশ্বরের পরিচালনার কোন দোষ কেউ ঈশ্বরকে দেয় না, কিন্তু সমস্ত ভাল কাজের ক্রেডিট বাই ডিফল্ট ঈশ্বরের।
এখানে বড় প্রশ্ন হল আওয়ামী লীগ তো মেয়র নির্বাচন দিচ্ছে, বিরোধীরা জিতে যাচ্ছে এবং আওয়ামীরা মেনেও নিচ্ছে। যদিও নির্বাচনে জিতে যাওয়া মেয়ররা পরবর্তীতে কিক আউটও হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে কি করবে তা হিসেবে না নিয়েও বলা যায়- এখনই তারা যা করছে তা পুরাপুরিই ফ্যাসিস্ট ও ডিক্টেটরশিপের মাধ্যমেই দেশ চালাচ্ছে।
জার্মান প্রবাসী ইজিপশিয়ান লেখক ও সাংবাদিক হামিদ আবদেল সামাদ তার বই “ ইসলামিক ফ্যাসিজম” এ বলেছেন – কি করে বুঝবেন দেশ পার্মানেন্ট ফ্যাসিজমের দিকে চলে যাচ্ছে? ফ্যাসিজম সমাজে চালু হয় পেয়াজের লেয়ারের ন্যায়। ফ্যাসিস্ট তার সমাজে একটার পর একটা আচার আচরণ, বিধি নিষেধ ধর্মীয় আবরণ বা লেয়ার দিয়ে ঢেকে দেয় এবং সর্বশেষ পেয়াজের কেন্দ্র বিন্দুতে নিশ্চিতে বসে রাজ্য শাসন করে।
হামিদ সামাদ বলেছেন- কেন আরব স্প্রিং আরব ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে হলেও ঘুরেফিরে আবার ফ্যাসিজমকেই মানুষ বেছে নিচ্ছে।
কারণ যুগ যুগ ধরে আরব সরকারগুলো ধর্মীয় পেয়াজের খোসা দিয়ে সমাজ তৈরি করেছে। পেয়াজের খোসা না ছাড়িয়ে সমাজ থেকে ফ্যাসিজমকে বের করা সম্ভব না।
প্রিয় জনাব ও জনাবা, আপনার কি মনে হয় না – আমাদের সংবিধান, আইন-কানুন, শিক্ষা, সামাজিক আচার-আচরণ গুলো ধর্মীয় পেয়াজের খোসা দিয়ে রাজনীতিবিদেরা পার্মানেন্টলি ঢেকে দিচ্ছে?