লিখেছেন মোসাম্মাত নাসরিন সুলতানা / ০৮ অগাস্ট ২০২৫ – ১৯:৪৪ ঘটিকা

Written by Mst. Nasrin Sultana / 08 August 2025 – 19:44 PM

৯১.০৪% মুসলমানের বাংলাদেশে কট্টরপন্থী ধর্মীয় রাজনীতি ধর্মকে পুঁজি করে প্রতিষ্ঠা যেমন পেল গত বারো মাসে, তেমনটি আর এর আগে হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। একশ্রেণির ধর্মান্ধ উগ্রবাদী গোষ্ঠী রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় বিশ্বাসে সুকৌশলে চরমপন্থার দিকে প্ররোচিত করছে। ছাত্র-রাজনীতির সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এই প্ররোচনার করাল গ্রাস সুস্পষ্ট। তারুন্যের সাহসী আধুনিকতা যখন ধর্ম-ভিত্তিক ডানপন্থী রাজনীতিতে আশ্রয় নেয়, তখন ধর্মান্ধতার গন্ধে রি-রি করে ওঠে সেকুল্যার জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রের প্রাণ।

এতে সাধারণ মুসলিম পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে যে অস্থিরতা তৈরি হয়, ক্রমান্বয়ে পারস্পরিক সংহতির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ধর্ম পালনের যে পরম্পরা, এর ব্যত্যয় ঘটে ধর্মীয় কট্টরপন্থার মধ্য দিয়ে। ধর্মীয় কট্টরপন্থা মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করে; ধর্মীয় আবেগকে উত্তেজনায় পরিণত করে মত প্রকাশের অবরুদ্ধ পরিবেশ তৈরি করে; সবকিছুকে যুক্তিতর্কের বাইরে রেখে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে মানুষ হত্যাকে জায়েজ করা হয়। যুক্তিভিত্তিক মত প্রকাশকে দমন করা হয়। প্রশ্ন তোলাকে বলা হয় ‘ধর্ম অবমাননা’। যুক্তির জবাব দেওয়া হয় ফতোয়া, হুমকি কিংবা হত্যা দিয়ে। বাংলাদেশে অভিজিৎ রায়, রাজীব হায়দার, নীলয় নীল, ওয়াশিকুর বাবুদের নির্মম হত্যাকাণ্ড এই কট্টরপন্থারই নির্মম উদাহরণ। আজকের প্রেক্ষাপটে তাই জরুরি—একটি যুক্তিনির্ভর, মানবিক এবং সহনশীল সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে ধর্ম পালনের অধিকার যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন করার স্বাধীনতাও।

আসন্ন নির্বাচনে সমস্ত ধর্ম-ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও জোটকে বর্জন করবার আহবান জানাই। এনসিপি বা বিএনপিও যদি ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে সংশ্লিষ্ট করে, তাহলে তাদেরও বর্জন করতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ আগে। নাহলে হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারত বা ইহুদী জাতীয়তাবাদী ইসরাইল হওয়া সময়ের ব্যাপার।